মুসলিম নারীর দেনমোহর ও ভরণপোষণ প্রাপ্তির অধিকার ও করণীয়

ছবি- প্রতীকী
লিখেছেনঃ মোহাম্মদ জুনাইদ
                                 ছবি- প্রতীকী
বর্তমান বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদের হার বাড়ছে। অনেক নারী, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের নারীরা, তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর তাদের ন্যায্য দেনমোহর ও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
শহরের নারীরা আইনি সহায়তা নিতে পারলেও গ্রামে এখনো অনেকেই জানেন না, তালাকের পর নারী মোহরানা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবার কথা নয়। অনেকে সালিশ বা আপোষের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও সেটি প্রায়ই নারীর স্বার্থে হয় না।
তাহলে করণীয় কী?
  • প্রথম ধাপঃ লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করুন আপনার জেলায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা (ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড)-এর অফিস রয়েছে। সেখানে গিয়ে আবেদন করুন এবং লিখিতভাবে জানান—
    • আপনি তালাকপ্রাপ্ত
    • দেনমোহর ও ভরণপোষণ স্বামী দেয়নি
    • আপনি আপোষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে চান
                লিগ্যাল এইড অফিসার স্বামীকে নোটিশ পাঠিয়ে আপোষ বৈঠক ডাকবেন। অনেক সময় স্বামী তখন দেনমোহর দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেয়। এতে মামলা ছাড়াই দ্রুত সমাধান হতে পারে।
  • দ্বিতীয় ধাপঃ  আপোষে সমাধান না হলে – পারিবারিক আদালতে মামলা করুন
         যদি স্বামী লিগ্যাল এইড অফিসের ডাকে সাড়া না দেয়, বা আপোষে সমাধান না হয়, তখন পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করুন।
    • পারিবারিক আদালতে দেনমোহর ও ভরণপোষণ চেয়ে মামলা করা যায়
    • মামলা দায়েরের দিনেই সমন জারির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ডাক রশিদ জমা দিন
         সচেতনভাবে মামলাটি পরিচালনা করলে ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে রায় পাওয়া সম্ভব
         মামলার ধারাবাহিকতা বুঝুনঃ
            ১. মামলা দায়ের
           ২. সমন জারী ও ফেরত
           ৩. বিবাদীর জবাব
           ৪. আপোষের একটি তারিখ
           ৫. সাক্ষ্যগ্রহণ
           ৬. রায় ও ডিক্রী
👉 প্রতিটি তারিখে আদালতের আদেশ নিজে অনলাইনে দেখুন। আইনজীবী ও মুহুরীর ওপর পুরোপুরি নির্ভর না করে নিজেও সচেতন থাকুন।
   মোহাম্মদ জুনাইদ (ছবিঃফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখকঃ বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসে বিচারক হিসেবে কর্মরত

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*