বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চঃ অসুবিধা কী কী

সারাদেশের প্রতিটা জেলাতেই বিচারাদালত আছে। দেওয়ানী-ফৌজদারি সকল ধরণের মামলার বিচারকার্য সেগুলোতে পরিচালিত হয়। নিজ নিজ জেলা শহরেই জনগণ বিচার চাইতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যান। এর বাইরেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপজেলাতেও কোর্ট আছে। কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যায় নিম্ন আদালতের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপীল, রিভিসন প্রভৃতি দায়ের করে থাকে উচ্চ আদালতে। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালত বলতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট -এর হাইকোর্ট বিভাগ। আর তা করতে হলে দেশের সকল জেলার মানুষকেই ছুটে আসতে হয় ঢাকায়। কেমনা আমাদের সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবস্থান ঢাকায়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। ৩রা জুলাই, ২০২৫ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের নবম দিন শেষে  সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এর আগেও এরশাদ আমলে আশির দশকেও এই প্রচেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সফলতার মুখ দেখেনি।

বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন নিয়ে আইনজীবী, রাজনৈতিক নেতা কর্মী, আইনের ছাত্র-শিক্ষক, গবেষক সবার মধ্যে চলছে তর্ক বিতর্ক। এসবের মধ্যে থেকে যেমন উঠে আসছে নানা ধরণের সুবিধার কথা আবার অসুবিধা – আশঙ্কার কথাও উঠে আসছে। আসুন জেনে নেয়া যাক কী ধরণের অসুবিধা হবে এতেঃ

  • হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল হলে সেই ঢাকাতেই আসতে হবে, কেননা সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বেঞ্চ ঢাকাতেই থাকবে।
  • অনেক সময় আঞ্চলিক ক্ষমতাসীনের দাপটে আদালত প্রাঙ্গণের কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
  • অনেকে মনে করেন, আপীল বিভাগ যেহেতু ঢাকায় থাকবে ফলে ভালো আইনজীবী বিভাগীয় শহরে না পাওয়া গেলে, তাদেরকে নিয়ে যেতে বিচারপ্রার্থীদের বেশি খর‍চ বাড়বে।
  • যথাযথ কোর্ট বিল্ডিং, বার বিল্ডিং এবং বিচারপতিদের বাসস্থান ইত্যাদি বিষয়ে অবকাঠামোর  নির্মাণ এবং সঠিক নিরাপত্তা প্রদান।
  • মাঝে মধ্যে দেখা যায় জেলা পর্যায় কিছু আইনজীবী পছন্দমত আদেশ না পেলে – হৈচৈ, আদালত বর্জন, আদালতে অশোভন কার্যক্রম ইত্যাদিতে লিপ্ত হয়। এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রাখতে হবে।
  • একই সাথে জেলা পর্যায়ের সেই সকল আইনজীবীদের জন্য বার কাউন্সিল এর উদ্যোগে গ্রুমিং করার উদ্দ্যেশে ট্রেইনিং আয়োজন করতে হবে।
  • বিচারপতিদের বদলির ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে রাখতে হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*