বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে সংস্কার কার্যক্রম স্থায়িত্ব পাবে না: প্রধান বিচারপতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অডিটরিয়ামে ‘রিমেইনিং দ্য ফিউচার অব জাস্টিস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বিচার বিভাগ স্বাধীন না হয়, কোনো সেক্টরের সংস্কার কার্যক্রমই স্থায়িত্ব পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য বিষয়। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন না হয়, কোনো সেক্টরের সংস্কার কার্যক্রমই স্থায়িত্ব পাবে না। বিচার বিভাগে সংস্কারের ওপর ভিত্তি করে আরও বৃহত্তর সংস্কারের কাঠামো নির্মিত হতে পারে। বর্তমান সাংবিধানিক বাস্তবতায় বাংলাদেশে বিচার বিভাগই একমাত্র পূর্ণাঙ্গ কার্যকর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অডিটরিয়ামে এ কে খান ফাউন্ডেশন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘৭ম এ কে খান মেমোরিয়াল ল লেকচার-২০২৫’-এ ‘রিমেইনিং দ্য ফিউচার অব জাস্টিস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি তাঁর ভাষণে বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কার রোডম্যাপ (Roadmap) বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন এবং পদ্ধতিগত দক্ষতা এই তিনটি লক্ষ্য কে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের পূর্ণ প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সুপ্রীম কোর্টের অধীনে একটি আলাদা বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়েছে, যা সংস্কার অগ্রগতির মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে। সারাদেশে বিচারকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতে একটি বিস্তৃত বদলি ও পদায়নে নীতিমালা সরকারের কাছে ইতোমধ্যে পেশ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান বিচারপতি ইতোপূর্বে তাঁর গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ উল্লেখ করে বলেন, তিনি ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছেন যার মধ্যে দুর্নীতি নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বিচারপ্রার্থীদের সহায়তার উদ্দেশ্যে সুপ্রীম কোর্টে দুটি হেল্পলাইন সেবা চালু, একটি পেপার-ফ্রি কোম্পানি বেঞ্চ চালু, সুপ্রীম কোর্টের উভয় বিভাগে একটি ডিজিটাল রিকুইজিশন সিস্টেম চালু, কেস ট্র্যাকিং ড্যাশবোর্ড কার্যকর করাসহ ২০১৫ সাল থেকে স্থগিত থাকা বিচারকদের ব্যক্তিগত তথ্যপত্র (PDS) হালনাগাদ করার উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, আরও বিভিন্ন বিশেষায়িত আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সুপ্রীম কোর্ট হতে সরকারের নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়েছে যার মধ্যে শিশু আদালত, বিদ্যুৎ আদালত এবং অন্যান্য বিশষায়িত আদালত উল্লেখযোগ্য। ইতোমধ্যে সরকার এসব বিষয় গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*